মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২৪ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞাপন :
সংবাদিক নিয়োগ! আপনি যদি সাংবাদিকতা এবং প্রতিবেদনে অভিজ্ঞ হন এবং ব্রেকিং নিউজ থেকে প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরি করার জন্য আগ্রহী হন, তবে সম্মানিত সংবাদ সংস্থা তে আপনার জন্য সুযোগ আছে। সংবাদিক মান্যতা এবং প্রতিবেদন ক্ষমতা সাথে জয়েন করুন।
সংবাদ শিরোনাম
এবার হায়েনার নখর ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থীর সম্ভ্রমে! মুক্তাগাছায় সুস্বাস্থ্যের জন্য ফলিত পুষ্টি বিষয়ক সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ শুরু পারভেজ হত্যার প্রতিবাদে মুক্তাগাছা ১নং দুল্লা ইউনিয়ন ছাত্রদলের মানববন্ধন মুক্তাগাছায় আ’লীগ নেতা গ্রেফতার মুক্তাগাছায় সরকারি অফিসের তালা ভেঙে চুরির চেষ্টা!  চাকরীর প্রলোভনে কোটি টাকা আত্মসাৎকারী নুরু গ্রেফতার এবার মুক্তাগাছায় শিশু কন্যা ধর্ষিত!  ধর্ষকের ফাঁসির দাবিতে উত্তাল জনতা! মুক্তাগাছায় সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুল ছাত্রসহ নিহত ২ ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের কোটা বাতিলের দাবিতে বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন  মুক্তাগাছায় ঢাকা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

পুরনো গাছের মৌলিক চাহিদা 

জেলা প্রতিনিধি (ময়মনসিংহ): বাংলাদেশে বহুল প্রচলিত একটি কাজ ‘বৃক্ষ রোপণ’অথচ যাকে কেন্দ্র করে এ নামটি ব্যবহার করে থাকি তাকে আমরা ভুলতে বসেছি। বাণিজ্যিকভাবে দেশি-বিদেশী বিভিন্ন প্রকার গাছ রোপণ করলেও বর্তমানে বটগাছ রোপণের তেমন কোন উদ্যোগ আর আমাদের চোখে পড়েইনা বললে চলে। নিরবে শেষ হতে চলেছে শতশত বছর ধরে টিকে থাকা আমাদের দেশীয় এ গাছ’টি।

সাধারণ ভাবে বুঝে থাকি এ গাছ জ্বালানি আর কিছু কাঠের ব্যবহার ছাড়া তেমন কোন কাজে আসেনা। বটগাছের ফল মানুষ খায় না, অতীতে মানুষের কাছে এ বৃক্ষের ছায়া অতি প্রয়োজনীয় ছিল কিন্তু বর্তমানে রাস্তার উন্নয়ন ও দ্রুতগামী যানবাহন হওয়ার কারনে এখন প্রয়োজনীয়তাও অনেক কমে গেছে। জীবন জীবিকার সংগ্রামে ছুটতে গিয়ে বাল্যকালে শিখে আসা কিছু বাক্য ভুলতে বসেছে। ভাবার সময় পর্যন্ত পাচ্ছেনা, যেমন- আমাদের চার পাশে যা কিছু আছে তা নিয়েই আমাদের পরিবেশ, আরও শিখেছিলাম মানুষ একা বাস করতে পারেনা, এই থেকে শুধু ভেবে ছিলাম একজন মানুষ অন্য মানুষ ছাড়া বাঁচতে পারেনা। কিন্তু এটির অর্থ যে ব্যাপক, শুধু মানুষ নয়, আমাদের চার পাশের সৃষ্টির অনেক কিছুকে বুঝানো হয়েছে তা বুঝতে অনেক সময় লেগেছে।

ময়মনসিংহ জেলা মুক্তাগাছা উপজেলার ২নং বড়গ্রাম ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড বকচর গ্রামে ঈদগাহ মাঠ ও গোরস্থানের পাশে একটি বটগাছ রয়েছে। ঐ এলাকাবাসীর কথা অনুযায়ী গাছটি সঠিকভাবে বয়স বলতে পারেনা তবে একবৃদ্ধ বলে এই বটগাছটি চার প্রজন্মে দেখেছে তবে আনুমানিক প্রায় ২৫০/৩০০ বছর বয়স হবে বলে ধারণা করা হয়, আজও গাছটি দাঁড়িয়ে আছে। জায়গা সম্পর্কে জানতে চাইলে স্থানীয়রা বলেন, এক পাশে গোরস্থান মাদ্রাসা ও পুকুর আরেক পাশে ঐতিহ্যবাহী বকচর ঈদগাহ মাঠ, গাছটির সাথে মানুষের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। দীর্ঘদিন আশেপাশে এলাকার মানুষ এক সঙ্গে এই জায়গায় দুই ঈদের নামাজ আদায় করতেন।

এখন এ-ই গ্রামের মানুষ এখানে ঈদের নামাজ পড়েন। জায়গাটি বকচর ঈদগাহ্ অর্থবা বকচর বটগাছ হিসেবে পরিচিত। এলাকার ও সমাজের সকল মানুষ জায়গাটি ব্যবহার করেন। জায়গাটি পারিবারিক কোন ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা নয় গোরস্থান ও মাদ্রাসার নামে ওয়াপ্প করা।

কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, ধর্মীয় স্থান ও হাট বাজারকে কেন্দ্র করে। ব্যক্তি মালিকানা জায়গায় যে সব বটগাছ ছিল তা কেটে ফেলা হচ্ছে।এর কারণ সম্পকে জানতে চাইলাম ঐ গ্রামের মাওলানা আবুল হোসেন সাহেব (৭০) ফলে ব্যক্তি মালিকানা জায়গার বটগাছ গুলো নিধন করা হচ্ছে। এতে করে দেশ ও জাতি বিপদগ্রস্ত হচ্ছে।

তিনি বটগাছ সম্পর্কে আরও বলেন, প্রাচীন ‘বটগাছ রক্ষায় সরকারিভাবে সঠিকভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। যেমন- নদী, খাল-বিল,ও পতিত জায়গায় বৃক্ষ রোপণ ও রক্ষণাবেক্ষনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। তবেই সহজে এসব গাছ নিধন করতে পারবেনা। তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সরকার, জন প্রতিনিধি ও জনগণ উভয়ই এগিয়ে আসার অতি প্রয়োজন।চাহিদা অনুযায়ী যোগানের সৃষ্টি হবে, গত বছরে মুক্তাগাছা উপজেলা বৃক্ষ মেলায় বটগাছের চারার সন্ধান চইলে স্থানীয় দুলাল নার্সারির মালিক বলেন, বটগাছ কেউ কিনতে চায়না তাই আমরা চারাও উৎপাদন করিনা।

এত প্রয়োজনীয় একটি গাছ বটগাছ সরাসরি আমাদের উপকারে আসে সেটা আমরা কম দেখতে পাই। কিন্তু এ গাছের ফল অধিকাংশ পাখির প্রধান খাদ্য। বটগাছ না থাকলে সেই এলাকায় বিভিন্ন ধরনের পাখির খাদ্য ও বসবাসের সমস্যা তৈরি হবে সেটা আমার অনেকেই মনে করিনা।

যেমন টিয়া পাখি এসব বড় গাছের উপরের ডালের গর্তে বাস করে। আজ টিয়া পাখির মত কিছু পাখি বৈচিত্র্য নিরবে কমে যাচ্ছে, সেটা দেখার সময় কি আমাদের আছে?

পাখিরা যে ফসল সহ ফুল ফলের পরাগায়ণ ও বিভিন্ন গাছের বংশ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে যাচ্ছে সেটা আমাদের প্রত্যেকের অজানা নয়। এমনকি বটগাছের আবিষ্কারক হচ্ছে পাখি, ফল খেয়ে মল ত্যাগের মাধ্যমে গাছটি তৈরি হয়। গাছ সাধারণত মানুষেরই নয়, সকল প্রাণির জন্য অক্সিজেন প্রদান করেন।

এ সকল বড় গাছ আবহাওয়া, জলবায়ু, বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, ঝড় ও বজ্রপাত প্রতিরোধ সহ বিভিন্নভাবে যে আমাদের জীবনের সাথে অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত তা সকলেই উপলব্ধি করে থাকি। একটি বটগাছ শুধু গাছ নয়, এক একটি বাস্তু সংস্থান। আর এই বাস্তু সংস্থানের উপর নির্ভর করেই সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল প্রাণি মানুষও টিকে আছে। তাই বেশি বেশি গাছ লাগান পরিবেশ বাঁচান, গাছ আমাদের সত্যিকারে পরম বন্ধু, গাছ কে বাঁচানোর জন্য এই উদ্যোগ মানুষকেই নিতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন :

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত