বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৫ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কখনো সাংবাদিক, কখনো আওয়ামীলীগ এমপি মির্জা আজমের আত্মীয়, কখনো সমাজসেবা অধিদপ্তরের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও সচিবের আত্মীয় পরিচয়দানকারী এবং বিভিন্ন সময় সামাজিক মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করতে স্বৈরাচারী হাসিনাকে নিয়ে প্রত্যার্পনের পোস্টকারী আওয়ামী প্রতারক নুরুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে মুক্তাগাছা থানা পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার চেচুয়া বাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার ঘোট ভাংবাড়ী গ্রামের আব্দুল বারিকের ছেলে। মুক্তাগাছা থানার ওসি কামাল জানান, প্রতারণার কথা তিনি শুনেছেন। এ ব্যাপারে অভিযোগ না হলে কিচ্ছু করার নেই। তাকে সহিংসতা ও বিস্ফোরক মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
জানা যায়, নুরুর বাড়ী জামালপুরের মাদারগঞ্জে। মুক্তাগাছা উপজেলার তারাটি ইউনিয়নের বিরাশী গ্রামে শ^শুরবাড়ী হওয়ায় দেড় দশক ধরে চেচুয়ায় বসবাস করে। আওয়ামীলীগের সাবেকমন্ত্রী মির্জা আজমের এলাকার এবং আত্মীয় পরিচয় দিয়ে সমাজকল্্যাণ মন্ত্রণালয়ের লবিংয়ের কথা বলে চেচুয়ার মলাজানি আদিবাসী স্কুলে নিয়োগে তিন কোটি টাকার লেনদেন করে। পরবর্তীতে প্রভাতি স্কুল মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলেও স্কুলের প্রধান শিক্ষকের মৃত্যুর পর সে ভারপ্রাপ্ত প্রধান হয়। আদিবাসী স্কুলের পরিচালক বনে গিয়ে ২৫ জন শিক্ষক ও ১৫ জন সহায়ক কর্মী পদে চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। সে সকল শিক্ষক কর্মচারীরা মানবেতন জীবন যাপন করছে। এইভাবে সে গড়েছে সম্পদের পাহাড় ও আলীসান বাড়ী। তার ছোট ভাইয়ের নামে সেনা কল্্যাণের ডিলারশীপও নিয়েছে। গড়েছে নিজস্ব পেটুয়া বাহিনী। আদিবাসী বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীরা প্রতিবেদককে জানান, চাকরীর কথা বলে আমাদের থেকে ৬লক্ষ টাকা করে নিয়েছে। এখনও পর্যন্ত স্কুলের কোন অনুমোদনই নাই। টাকা চাইলে বলে সামনের মাসে হয়ে যাবে। মন্ত্রণালয়ে গিয়ে জানতে পারি আদৌ চাকরী হবার কোন সম্ভাবনা নাই তার সাথে মন্ত্রণালয়ের কোন সম্পর্ক নাই। যে সব কাগজ আমাদের দেখিয়েছে তার সবই জাল স্বাক্ষর করে বানানো। আর এখন অপেক্ষায় থেকে বয়স শেষ হয়ে যাওয়াতে আর কোন চাকুরী নিতে পারছি না। সুদে ঋণ করাতে বোঝা আর সংসার টানতে খুব নাজুক অবস্থায় পরে গেছি। স্থানীয়রা জানান, তার প্রতারণার স্বীকার হয়েছে এখানকার অনেকেই। প্রতারণা করে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদ দখলের পায়তারা ছিলো তার। অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভূয়া কাগজ দেখিয়ে নিঃস্ব করেছে। তার প্রতারণার জন্য শা¯িত পাওয়া উচিত। এ দিকে তার গ্রেফতারের খবর শুনে এলাকাবাসী এবং ভুক্তভোগীরা বিষয়টি নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে প্রতারক নুরুর সর্বোচ্চ শাস্তি ও ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন।
ভূক্তভোগীরা জানান, মিলন বাজার মাদারগঞ্জের সুখ নগরী সমাজ উন্নয়ণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক পদধারী নূরূল ইসলাম সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী নূরুজ্জামান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আশরাফ খসরুর সাথে সিন্ডিকেট করে ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, জামালপুরের সরিষাবাড়ী এবং বগুড়ার স্কুল গুলোর শত শত শিক্ষকের কাছ থেকেও কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। মুক্তাগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলাম বলেন, পূর্বে সে স্বাক্ষর জাল করেছিল। সে জন্য তাকে বহিস্কার করা হয়েছিল।